সব প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।
সরকারি-বেসরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো দুই টাকা মাশুল (সার্ভিস
চার্জ) দিয়ে অনলাইনে নাগরিকের পরিচয়পত্রের সত্যতা এবং সাধারণ তথ্য যাচাই
করতে পারবে। পুলিশ বিভাগ ব্যক্তিগতসহ সব তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ পাবে।
এ
জন্য নির্বাচন কমিশন জাতীয় পরিচয়পত্রধারী নাগরিক বা ভোটারের তথ্য অনলাইনে
যাচাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় বিধির খসড়া প্রণয়ন করেছে। আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই
শেষে বিধি চূড়ান্ত হলে আগামী মাস (অক্টোবর) থেকেই তথ্য যাচাইয়ের কাজ শুরু
হতে পারে।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইনের বিদ্যমান বিধান (১১ ধারা) অনুযায়ী
বর্তমানে পরিচয়পত্রের ব্যবহার বাধ্যতামূলক নয়। আইনে বলা আছে, যেকোনো ধরনের
সেবা বা নাগরিক-সুবিধা পেতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদর্শন ও অনুলিপি জমা
দিতে হবে। তবে সারা দেশে নাগরিকদের অনুকূলে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের কাজ
শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যাবে না
এবং এ জন্য কোনো নাগরিককে তাঁর অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।
আইনের
২২ ধারায় বলা আছে, এ জন্য কমিশন প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন করতে পারবে। বিধি
চূড়ান্ত হওয়ার পর জাতীয় পরিচয়পত্রের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার জন্য
সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলো প্রজ্ঞাপন জারি করতে
পারবে। কমিশনের আইন শাখা সূত্র জানায়, চলতি মাসের মধ্যে চূড়ান্ত বিধি হাতে
পাওয়া যাবে বলে কমিশন আশা করছে।
এ বিষয়ে ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয়
পরিচয় নিবন্ধন প্রকল্পের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আখতারোজ্জামান
সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনলাইনে তথ্য যাচাইয়ের সুযোগ দেওয়ার জন্য
আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আইনগত দিকটি চূড়ান্ত হলেই কাজ শুরু করা
যাবে।’
সূত্র জানায়, মোবাইল ফোন কোম্পানি, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক,
বিমাসহ সব ধরনের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্রে উল্লেখ
করা সাধারণ তথ্য যাচাই করতে পারবে। এর মধ্যে রয়েছে পরিচয়পত্রধারীর নাম,
ঠিকানা ও স্বাক্ষর, পিতা ও মাতার নাম, জন্মতারিখ, রক্তের গ্রুপ ও
পরিচয়পত্রের নম্বর।
তবে সরকারের পুলিশ বিভাগ পরিচয়পত্রধারীর হাতের ছাপ,
আঙুলের ছাপ, মুখাবয়ব, চোখের মণি, জন্মস্থান, বৈবাহিক অবস্থা, সন্তানের
সংখ্যা, স্ত্রীর নামসহ নিবন্ধন ফরমে উল্লেখ করা সব (৩১টি) তথ্যই জানতে
পারবে।
এ ছাড়া মাশুল নির্ধারণের জন্য কমিশন গত ডিসেম্বরে মোবাইল ফোন
কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তি এবং সরকারের সব কটি
মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করে।
সূত্র জানায়, সেবাদানের ব্যবস্থা অব্যাহত
রাখা এবং যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কমিশনের প্রতিবছর ব্যয় হবে দেড়
কোটি টাকা। সে জন্যই সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে প্রতিবার
যাচাইয়ের জন্য দুই টাকা করে মাশুল আদায়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু
সাংবিধানিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় কমিশন নিজেদের অনুকূলে এ টাকা আদায়
করতে পারবে না। এ জন্য কমিশন অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্য কোনো
প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মাশুল আদায় করা সম্ভব কি না, তা মন্ত্রণালয়ের কাছে
জানতে চেয়েছে।
No comments:
Post a Comment